গাজীপুরের শ্রীপুরে ৩ মার্চ ডাকাতের কোপে পুলিশের দুজন সদস্য আহত হয়েছিলেন। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় ডাকাত দলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে র্যাব-১ ও র্যাব-১০-এর সদস্যরা সমন্বিত অভিযান চালিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
আজ শুক্রবার র্যাব সদর দপ্তর থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার মো. খলিল সরদারের ছেলে মো. ইসমাইল সরদার (৩৮), একই উপজেলার আবুল হোসেনের ছেলে মো. হানিফ (৪০) ওরফে মাস্টার হানিফ এবং নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার মো. মুসলিম মিয়ার ছেলে মো. কামরুল মিয়া (২০)। এর আগে ঘটনার দিন মো. রুবেল মিয়া (২৭) নামের এক ডাকাত সদস্য পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। এ ঘটনায় এই নিয়ে মোট চার আসামি গ্রেপ্তার হলেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে র্যাব সংবাদ সম্মেলনে জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মো. কামরুল মিয়া দিনে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন, রাতে করতেন সংঘবদ্ধ ডাকাতি। ডাকাতি পেশাকে আড়াল করতেই তিনি এই ছদ্মবেশ ধারণ করতেন। কামরুল দিনের বেলা সম্ভাব্য ডাকাতি করার স্থান চিহ্নিত করতেন।
অপর দিকে মো. হানিফ ডাকাত দলের কাছে ‘মাস্টার হানিফ’ হিসেবে পরিচিত। তিনি নিরাপদে ডাকাতি করার সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করতে পারতেন। তাই তিনি ডাকাতির মাস্টার হিসেবে খেতাব পান। অপর দিকে ডাকাত দলের প্রধান ইসমাইল সরদার একসময় একটি কেমিক্যাল কারখানার মালামাল সরবরাহের কাজ করতেন। একপর্যায়ে কেরানীগঞ্জ এলাকার এক ডাকাতের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তিনি ডাকাত দলে নাম লেখান। একসময় গড়ে তোলেন নিজের নেতৃত্বে নতুন ডাকাত দল। ডাকাতির কাজ সহজ করতে ছদ্মবেশে ইজিবাইক চালাতেন তিনি। র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রথমে কেরানীগঞ্জ থেকে ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ চলছে।
৩ মার্চ দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে শ্রীপুরের মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কের বদনীভাঙ্গা এলাকায় হাশিখালী সেতুর কাছে সড়কে গাছ ফেলে যানবাহনে ডাকাতি হচ্ছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলের অদূরে দায়িত্বরত শ্রীপুর থানা-পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মো. আলিমের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল সেখানে পৌঁছায়। ঘটনাস্থলে যাওয়া মাত্রই ডাকাত দলের সদস্যরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। ডাকাতদের দায়ের কোপে আহত হন দুই পুলিশ সদস্য। এ সময় ডাকাতদের ধাওয়া দিলে তাঁদের মধ্যে রুবেল মিয়া নামের এক সদস্য দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় চলন্ত ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে আহত হন। তখনই তাঁকে আটক করা হয়।