ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে পাহাড়ি এলাকা রাঙামাটিতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আর এতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। রবিবার (২৬ মে) সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে রেমাল মোকাবিলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সম্ভাব্য ভূমিধ্বস এড়াতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্নের কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসনে খানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহমেদ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারি পরিচালক দিদারুল আলম এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বিদ্যুৎ ও এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীগণ। ঘূর্ণিঝড় রেমালের সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং, পৌরসভায় ২৯টি এবং রাঙামাটির ১০টি উপজেলায় ৩২২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা সদরসহ প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এছাড়াও পুলিশ, আনসার, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সংগঠনসমূহকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল সতর্কতায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদেও নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করেছে জেলা প্রশাসন। তবে রাঙামাটিতে এখনো রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করছে। রাঙামাটির শহরের ভেদভেদী, রূপনগর, শিমুলতলীসহ আরো কয়েকটি এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে অন্তত দশ হাজারের বেশিও মানুষ। ২০১৭ সালে এই স্থানগুলোতে ব্যাপক বর্ষণের ফলে অর্ধশতাধিক লোকের মৃত্যু ঘটে। পুরো জেলায় মৃত্যুবরণ করে ১২০ জন। ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হলেও বৃষ্টিপাত শুরু না হওয়ায় তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। তাদের দাবি, যখনই ভারী বৃষ্টিপাত হবে, তখন তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যাবে।
শহরের রুপনগর এলাকার বাসিন্দা রাজীব দাশ বলেন, প্রতিবছরই বৃষ্টিপাত হলে আমাদের এখানে পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কা তৈরি হয়। ঘূর্ণিঝড় রেমালের কথা আমরা শুনেছি। যেহেতু রাঙামাটিতে এখনো বৃষ্টিপাত হচ্ছে না, তাই আমরা আমাদের বাড়িতেই আছি। যদি বৃষ্টি বেশি হয় সেক্ষেত্রে আশ্রয়কেন্দ্রে যাব। শিমুলতলী সমাজ উন্নয়ন কমিটির সভাপতি আবু বক্কর মিঠু বলেন, বৃষ্টিপাত হলেই প্রশাসন আমাদের এখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়। তবে, এখনো আকাশ পরিষ্কার এবং বৃষ্টিও হয়নি, তাই কোন পরিবারই আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার ব্যপারে আগ্রহী না। তবে আমরা এই ব্যাপারে সতর্ক আছি। পরিস্থিতি খারাপ দেখলে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাব।
prothomasha.com
Copy Right 2023