মোহাম্মদ রিজওয়ান, ফখর জামান ও ইফতিখার আহমেদ—শেষ ৮ ওভারে ৪৮ রান তোলার জন্য অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানরা ছিলেন পাকিস্তান দলে। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে চাপহীন ওই সময়ে একজনও হাল ধরতে পারেননি; বরং আউট হয়েছেন দৃষ্টিকটুভাবে। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের এমন ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ওয়াসিম আকরাম। রিজওয়ান, ইফতিখারদের ম্যাচ পরিস্থিতি বুঝতে পারার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।নিউইয়র্কে ভারতের ১১৯ রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের ৬ রানের হারে বিরক্ত পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভিও। বিশ্বকাপের পাকিস্তান দলে বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
ধারাভাষ্যের সূত্রে মাঠে বসেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখেছেন আকরাম। দেখেছেন ৪৪ বলে ৩১ রান করে রিজওয়ান কীভাবে যশপ্রীত বুমরাকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন। এ নিয়ে ম্যাচ শেষে স্টার স্পোর্টসে বিরক্তিই প্রকাশ করেছেন আকরাম, ‘ওরা ১০ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছে। আমি তো ওদের শেখাতে পারব না। রিজওয়ানের মধ্যে কোনো গেম অ্যাওয়ারনেসই (ম্যাচ পরিস্থিতি বোঝা) নেই। তার জানার কথা বুমরার হাতে বল তুলে দেওয়া হয়েছে উইকেটের জন্য। এ ক্ষেত্রে বুমরাকে সতর্কতার সঙ্গে খেলাটাই হতো বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু রিজওয়ান বড় শট খেলতে গেল এবং আউটও হলো।’
পাকিস্তান দলের যাঁরা বড় শট খেলতে পারেন, তাঁদের অন্যতম ফখর ও ইফতিখার। ফখর এক ছয় এক চারে ৮ বলে ১৩ রান করে হার্দিক পান্ডিয়াকে ওড়াতে গিয়ে ঋষভ পন্তের হাতে ক্যাচ দেন। আর ইফতিখার ১৯তম ওভারে বুমরার ফুলটস বলে ক্যাচ তোলেন। এ দুজনের মধ্যে ইফতিখারের তীব্র সমালোচনা করেছেন আকরাম, ‘ইফতিখার আহমেদ লেগ সাইডে একটা শটই (খেলতে) জানে। সে কয়েক বছর ধরে দলের অংশ, কিন্তু কীভাবে ব্যাট করতে হয়, জানে না। আর ফখরের গেম অ্যাওয়ারনেস নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।’আকরাম কথা বলেছেন পাকিস্তান দলের খেলোয়াড়দের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিয়েও।
বিশেষ করে বাবর আজম ও শাহিন আফ্রিদির মধ্যে নেতৃত্ব কেন্দ্র করে যে মানসিক লড়াইয়ের গুঞ্জন শোনা যায়, সেটিরই ইঙ্গিত উঠে এসেছে আকরামের কথায়, ‘খেলোয়াড়েরা একে অপরের সঙ্গে কথা বলে না। এটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, আর আপনি দেশের হয়ে খেলছেন। এ ধরনের খেলোয়াড়দের দেশে বসিয়ে রাখুন।’খেলোয়াড়দের সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি পাকিস্তান ক্রিকেটের একটি প্রবণতাও তুলে ধরেছেন আকরাম। ব্যর্থতার জন্য খেলোয়াড়েরা কমই ভোগেন বলে দাবি তাঁর, ‘পাকিস্তানি খেলোয়াড়েরা মনে করে, তারা ভালো না করলে কোচ বরখাস্ত হবে। তাদের কিছু হবে না। সময় এসেছে কোচকে রেখে পুরো দলই বদলে ফেলার।’
সম্প্রচারমাধ্যমে আকরামের এসব মন্তব্যের দিনে প্রায় একই সুরে কথা বলেছেন পিসিবির প্রধানও। দ্য নেশনের খবরে বলা হয়, নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মধ্যে ‘পাইকারি’ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন নাকভি, ‘মনে হয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট দলের জন্য মাইনর সার্জারিই (ছোটখাটো অস্ত্রোপচার) যথেষ্ট। কিন্তু এ ধরনের বাজে পারফরম্যান্সের পর এটা পরিষ্কার যে, দলে মেজর সার্জারি দরকার।’আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে পাকিস্তানে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হওয়ার কথা রয়েছে। সে টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুত হতে দলের বাইরে থাকা প্রতিভাবানদের সুযোগ দেওয়ার সময় এসেছে বলেও মন্তব্য করেন পিসিবির চেয়ারম্যান।
prothomasha.com
Copy Right 2023