লাতিন আমেরিকার দেশ বলিভিয়ায় অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। প্রেসিডেন্টের প্যালেস ঘিরে ফেলেও সরে গিয়েছে সেনাসদস্যরা। গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেনাপ্রধানকে।গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বলিভিয়ার রাজধানী লাপাজে অবস্থিত প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কংগ্রেস ভবনে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান অভিযান চালায়। অভিযানের একপর্যায়ে একটি ট্যাংক প্রেসিডেন্টের বাসভবনের ধাতব ফটক ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে।
সে সময় সেনাপ্রধান জেনারেল হুয়ান হোসে জুনিগার প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে অবস্থান করছিলেন। সেনাসদস্যসহ যুদ্ধ ট্যাংক বেষ্টিত হয়ে এক ভাষণে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী দেশে গণতন্ত্র পুনর্গঠন করতে চায়, সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। হাতে গোনা সেই একই ৪০-৫০ জনকে দেশ পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না।
এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট আরসে বলিভিয়ার নাগরিকদের বলেন, তারা যেনগণতন্ত্র রক্ষা করতে সক্রিয় হন। সেনা জওয়ানরা তার প্রাসাদে আসার পর আরসে সামাজিক মাধ্যমে বলেন, ‘বলিভিয়ার সেনার কয়েকটি ইউনিট বেআইনিভাবে জড়ো হয়েছে। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে।’একইসঙ্গে তখনই তিনি নতুন সেনা কমান্ডারদের নাম ঘোষণা করেন। নতুন কমান্ডাররা প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও লা পাজের কেন্দ্রে থাকা অন্য জায়গা থেকে সেনাদের ফিরে আসার নির্দেশ দেন।
আরসে যখন নতুন সেনা কমান্ডারদের নাম ঘোষণা করেন, তখন বিদ্রোহী সেনাপ্রধান স্বাভাবিকভাবেই বরখাস্ত হয়ে যান। নতুন সেনাপ্রধান হোসে উইলসন সানচেজকে নিয়োগ দেন। নিয়োগ পাওয়ার পরপরই সেনাদের ব্যারাকে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। আরসে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমি আপনাদের ক্যাপ্টেন, আমি নির্দেশ দিচ্ছি, আপনারা ফিরে যান। আমি কোনো অবাধ্যতা বরদাস্ত করব না।’পরে সেনারা সেখান থেকে চলে যায়। সেসময় রাস্তায় প্রেসিডেন্টের হাজার হাজার সমর্থকও চলে এসেছিল। গ্রেপ্তার করা হয় বরখাস্ত সেনাপ্রধানকে।
সেনা প্রত্যাহারের পর একে বলিভিয়ার গণতন্ত্রের জন্য বিজয় হিসেবে ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট আরসে। দেশটির নাগরিকদের উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেন, ‘বলিভিয়ার জনগণকে অসংখ্য ধন্যবাদ। গণতন্ত্র দীর্ঘজীবী হোক।’স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত বলিভিয়া ২০০টির মতো সেনা অভ্যুত্থান ও বিদ্রোহ দেখেছে। ২০১৯ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট মোরালসকে যখন ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়, তখনো তার পিছনে সেনার ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল।
prothomasha.com
Copy Right 2023