Skip to content

মানুষের তিন বেলা খাওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে সরকার: রিজভী

    মানুষের তিন বেলা খাওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে সরকার: রিজভী prothomasha.com

    বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, দেশের সমগ্র অর্থনীতিকে ভয়াবহ এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে সরকার। সাধারণ মানুষ ফতুর হয়ে খেয়ে না–খেয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরছে। তিন বেলা খাওয়ার সাধ্য কেড়ে নিয়েছে সরকার। আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপি নেতা রিজভী। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

    রিজভী আজকের সংবাদ সম্মেলনে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থতির নানা দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রহীনতা, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, বিদেশে অর্থ পাচার, মূল্যস্ফীতি, নিম্নমুখী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, চলতি হিসাবের ঘাটতি, রাজস্ব ঘাটতি ও বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার নজিরবিহীন দরপতনে জনগণ আতঙ্কিত। বর্তমানে দেশের অর্থনীতির প্রতিটি প্রধান সূচকের অবস্থান এতটাই শোচনীয়, যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে এক মহাবিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। দেশকে ঋণের ফাঁদে ডুবিয়ে দিয়েছে সরকার।

    রিজভী বলেন, অভ্যন্তরীণ ঋণ শোধ করতে ট্যাক্স–ভ্যাট–কর–খাজনার পরিধি–আওতা বাড়িয়ে জনগণের গলায় গামছা দিয়ে শ্বাস রোধ করার অবস্থায় নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশি–বিদেশি ঋণের পরিমাণ বাংলাদেশের দুটি অর্থবছরের বাজেটের বেশি। যে শিশু ভূমিষ্ঠ হচ্ছে আজ, তার মাথায়ও প্রায় লাখ টাকার বেশি ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে সরকার।

    বিএনপির নেতা রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ঋণের টাকায় কানাডার বেগমপাড়া, আমেরিকায় বিলাসবহুল বাড়ি–গাড়ি–ব্যবসা, দুবাই–সিঙ্গাপুরে বিনিয়োগ, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমসহ তিন মহাদেশে সম্পদের পাহাড় গড়া হয়েছে। সুইস ব্যাংকে ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ কার কার নতুন অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হচ্ছে, সেটিও অজানা নয় অনেকের কাছে। আওয়ামী লুটেরাদের দেশে বহুতল বাড়ি, বিলাসী গাড়ি, ব্যবসা–বাণিজ্য, জীবনযাপনে জৌলুশ উপচে পড়ছে, আঙুল ফুলে বটগাছ হয়েছে। আর সাধারণ মানুষ ফতুর হয়ে খেয়ে না খেয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরছে। তিন বেলা খাওয়ার সাধ্য কেড়ে নিয়েছে লুটেরা সরকার।

    রিজভী বলেন, গরিবের বাঁচা–মরার সঙ্গে জড়িত প্রতিটি জরুরি পণ্যের দাম উল্কার গতিতে বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষের মাছ, মাংস, ডিম খাওয়া বন্ধ হয়েছে। নতুন করে গরিব হয়েছেন কয়েক কোটি মানুষ। অনাহার–অর্ধাহারের বৃত্তে আটকে আছে মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। মানুষের সঞ্চয় শেষ হয়ে গেছে, এখন ঋণ করে খাচ্ছে। বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্র অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

    রিজভী বলেন, লুটপাট আর দুঃশাসনের কারণে লাগামহীনভাবে বেড়েছে পণ্যের দাম। দেশে এখন সবচেয়ে নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি, আর সবচেয়ে মূল্যহীন গণতন্ত্রকামী জনগণের মতামত। গণতন্ত্রকামী জনগণের পেছনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি বিশেষ অংশকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। হামলা–মামলা, নির্যাতন–নিপীড়ন চালিয়ে, গুম–খুন–অপহরণ করে ভিন্ন দল ও মতের মানুষকে দমিয়ে রাখার অপচেষ্টা ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণের সামনে ঝোলানো হয়েছে মৃত্যুর খাঁড়া।