বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও কোরবানির ঈদ সামনে রেখে মসলার বাজার চড়া।কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা। আমদানিকারক থেকে শুরু করে ছোট বড় পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাপর্যন্ত মসলার দামে তেজিভাব। ১৪শ’ টাকার এলাচ সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রির প্রমাণও মিলেছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে। দ-ভোগ করেও স্বভাব পরিবর্তন হয়নি কারবারিদের। বরং অধিক মুনাফার লোভে দারুচিনি, গোলমরিচ, পেঁয়াজ, জিরা, রসুনসহ মসলা জাতীয় পণ্য বিক্রি চলছে বাড়তি দরে।এ বছর শুধু চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি মসলা জাতীয় পণ্য আমদানি হয়েছে। কিন্তু বাজারে এর প্রভাব নেই। বরং প্রতিদিনই বাড়ছে মসলার দাম। খাতুনগঞ্জের আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, অত্যাধিক শুল্ক, ডলারের রেট বৃদ্ধি এবং পরিবহন খরচ বেশি থাকায় মসলার দাম বেড়েছে।প্রতিবছরই ঈদুল ফিতরের সময় থেকে কয়েক দফায় দাম বাড়ে মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, ধনিয়া, জিরা, আদা ও হলুদের। ঈদুল আজহার আগ পর্যন্ত বাড়তি দামের ঝোঁক বজায় থাকে। তবে এবার ডলারের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দফায় দফায় মসলার দাম বাড়িয়েছে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট, যারা খাতুনগঞ্জে নয় পুরো বাংলাদেশে মসলার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে।চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানান, অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বাড়তি। এবার ডলারের রেটের কারণে মসলা কিনতে হয়েছে বাড়তি দামে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে, যারা সুযোগ বুঝে দাম বৃদ্ধি করে।খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস জানান, পেঁয়াজের দাম বেশি। এবার পেঁয়াজের বাজারে সংকট তৈরি হয় তখন, যখন ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হয়েছিল। এরপর দেশীয় ফলন বাজারে যখন ঢুকল তখন নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। ফলে পেঁয়াজের বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা ছিল। হিলির ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল, যার ফলে ভারতীয় পেঁয়াজের বাজার ছিল চড়া। এখনো পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী।অসাধু আমদানিকারক ও পাইকারদের কব্জায় এলাচের বাজার, যার ফলে লাগামহীন এ পণ্যের দাম অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হওয়া এলাচ এক বছরের ব্যবধানে এখন প্রতিকেজি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। আর লবঙ্গ ১ হাজার ৫শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।দারুচিনির দাম গত মাসের দুই দফায় বেড়ে এখন ৪শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকায়। জিরা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজি ৮শ’ টাকায়।ভারতীয় হলুদ ২৭০ থেকে ৩শ’ টাকা এবং দেশী হলুদ ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশী ধনিয়া ১৮০ টাকা কেজি। ভারতীয় মরিচ ৩৫০ থেকে ৪শ’ টাকা, হাটহাজারীর মরিচ ৩শ’ টাকা। চীনা আদা ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা হলেও এবার ১শ’ টাকা বেড়ে দাম পৌঁছেছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। চীনের রসুন ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
prothomasha.com
Copy Right 2023