কক্সবাজারের পেকুয়ায় মারামারির মামলায় গ্রেপ্তার হামিম মো. ফাহিম (২৫) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রর কোমরে রশি বেঁধে আদালতে তোলা হয়। কোমরে রশি বাঁধা ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে কোমরে রশি ও হাতকড়া পরিয়ে তাকে আদালতে তোলা হয়েছিল। বিষয়টিকে বেআইনি ও অমানবিক আখ্যা দিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) চকরিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক ও চকরিয়া অ্যাডভোকেট’স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মিফতাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দাগি আসামি ছাড়া কাউকে কোমরে রশি বাঁধা বা ডান্ডাবেড়ি পরানো যাবে না। একজন ছাত্রকে কোমরে রশি বাঁধা আইনসম্মত নয়, অমানবিকও বটে।’
হামিম মো. ফাহিম পেকুয়া সদর ইউনিয়নের শেখের কিল্লাঘোনা গ্রামের বাসিন্দা ও সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির এলএলবির শিক্ষার্থী। ফাহিম পেকুয়া সদরে একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন। পুলিশ ও ফাহিমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মারামারি মামলায় পরোয়ানায় গত শনিবার রাতে ফাহিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল রবিবার পেকুয়া থানা পুলিশ ওই ছাত্রের কোমরে রশি বেঁধে ও হাতকড়া পরিয়ে আদালতে হাজির করে। আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
হামিম মো. ফাহিমের বাবা শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘গত ডিসেম্বরের শুরুতে আমার ছোট ছেলের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ৯৯৯-এ ফোন করা হলে পুলিশ এসে আমার ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়। পরে ফাহিম বাদী হয়ে মামলা করে। এরপর প্রতিপক্ষের লোক গোপনে আদালতে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলা করলে ওয়ারেন্ট হয়। কিন্তু তা কেউ জানত না। সে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ও শিক্ষক হিসেবে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করে। কিন্তু তাকে এভাবে দাগি আসামির মতো কোমরে রশি বেঁধে আদালতে নেওয়া দৃষ্টিকটু।’
পেকুয়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রইস উদ্দিন জানান, ‘একটি মামলায় ফাহিমের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। আমরা শুধু ওয়ারেন্ট তামিল করেছি। আদালতে পাঠানোর বিষয়ে কিছু জানা নেই।’ পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, ‘নিরাপত্তা বলয়ে আসামিকে থানা থেকে আদালতে নেওয়া হয়েছে।’
চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এম এম রকীব উর রাজা বলেন, ‘আসামি গ্রেপ্তার ও কোমরে রশি বেঁধে আদালতে পাঠানোর বিষয় আমাকে কেউ জানায়নি। আপনার কাছ থেকে শুনলাম। ছবিটি দেখেছি, খবর নিচ্ছি।’
prothomasha.com
Copy Right 2023