বিরোধীদের ফাঁসাতে তথাকথিত গোয়েন্দা তথ্য থাকলেও বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সম্পর্কে গোয়েন্দারা বেখবর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, রাজধানীতে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লাখো সদস্য তৎপর, অথচ সীমান্ত এলাকা অরক্ষিত। সরকার দেশের সীমান্ত রক্ষায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।
ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতি-সশস্ত্র হামলা এবং দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন। আজ শনিবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে রুহুল কবির বলেন, বান্দরবানে শুরু হয়েছে ব্যাংক লুট, পুলিশের অস্ত্র লুট, অপহরণ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাতে গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যে বলা হয়েছে, কথিত কুকি–চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট নামে সশস্ত্র গোষ্ঠী এর সঙ্গে জড়িত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, কুকি–চিনের আস্তানা র্যাব ও আর্মি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। তারা সীমানা পার হয়ে ভিন্ন কোনো দেশে আশ্রয় নিয়েছিল। এখন তারা কোত্থেকে আসছে, কীভাবে আসছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যে প্রমাণিত, তিনি কুকি–চিন সম্পর্কে অবগত থাকলেও তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেননি। কোনো অজ্ঞাত কারণে কুকি–চিনকে তোয়াজ করা হয়েছে। এই সশস্ত্র গোষ্ঠী পাহাড়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় বেড়ে উঠলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কুকি–চিনের পরিবর্তে পাহাড়ে জঙ্গি ধরার নাটক করেছে। কুকি–চিনকে ব্যবহার করে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে গিয়ে সরকার বর্তমানে দেশের সার্বভৌমত্বকে বিপদে ফেলে দিয়েছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সম্পর্কে গোয়েন্দারা খবর রাখেনি বলে অভিযোগ করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বলেন, বিরোধী দল ও মতের মানুষকে ফাঁসাতে নানা রকমের তথাকথিত গোয়েন্দা তথ্য থাকলেও যেসব বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে হামলা করছে, তাদের সম্পর্কে গোয়েন্দারা বেখবর। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যাতে রাজধানীতে জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লাখো সদস্য রাজধানীতে তৎপর, অথচ সীমান্ত এলাকা অরক্ষিত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বান্দরবানের ঘটনাকে কোনো বিচ্ছিন্ন কিংবা একটি সাধারণ ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করলে ভবিষ্যতে এই সমস্যা আরও প্রকট হয়ে দেখা দিতে পারে। শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা বিজিবির ওপর নির্ভরশীল না থেকে অবিলম্বে দেশের সীমান্তজুড়ে সেনা মোতায়েন এখন সময়ের দাবি।
সংবাদ সম্মেলনের আগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ বন্দীদের মুক্তির দাবিতে মিছিল করেন বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবিরের নেতৃত্বে বেলা সোয় ১১টায় নয়াপল্টন থেকে মিছিল শুরু করে কাকরাইলের দিকে গেলে পুলিশ মিছিলটি আটকে দেয়। মিছিলে আরও অংশ নেন তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সদস্যসচিব মুজিবুর রহমান, মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব আব্দুর রহিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাহিদুল কবির, নজরুল ইসলাম, যুবদলের মেহবুব মাসুম প্রমুখ।
prothomasha.com
Copy Right 2023