ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখসহ পাইকারি বাজার এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজির অভিযোগে ৬৩ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র্যাব। তারা বলছে, পণ্যবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজির কারণে অযৌক্তিক-অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সংস্থার মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল-মঈন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গতকাল শনিবার ভোররাতে কারওয়ান বাজার, বাবুবাজার, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা মোড়, ইত্তেফাক মোড়, টিটিপাড়া, কাজলা, গাবতলী, ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন এলাকায় একযোগে অভিযান চালায় র্যাব। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে নগদ টাকা, বিভিন্ন ধরনের লাইট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান-সংস্থার জ্যাকেট, আইডি কার্ড, মোবাইল ও চাঁদা আদায়ের বিপুল রসিদ উদ্ধার করা হয়েছে।
খন্দকার আল-মঈন বলেন, সম্প্রতি অপ্রয়োজনীয়ভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে দেখা যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখ ও পাইকারি বাজার এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা কথিত ইজারাদারদের নির্দেশে কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে প্রতি রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে অবস্থান নিতেন। পণ্যবাহী ট্রাক এলে তাঁরা থামাতেন। চালক-সহকারীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন। কিছু ক্ষেত্রে তাঁরা চাঁদা আদায়ের রসিদ দিতেন। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর, মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি দিতেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা প্রতিটি পণ্যবাহী যানবাহন থেকে ২০০-৩০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করতেন। চাঁদা তুলে তা কথিত ইজারাদারদের কাছে জমা দিতেন। কথিত ইজারাদাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করেন। আর প্রতি রাতে চাঁদা তোলার কাজ করে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ৬০০-৭০০ টাকা করে মজুরি পেয়ে আসছিলেন।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, মহাসড়কের পাঁচ থেকে ছয়টি স্থানে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা তোলা হয়। এ ছাড়া ঢাকার প্রবেশমুখসহ বড় বড় পাইকারি বাজার এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা নেওয়া হয়। প্রতিটি স্পট থেকে প্রতিদিন অন্তত লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। গ্রামে কৃষকের কাছ থেকে এক কেজি শিম কেনা হয় ১৫ টাকায়। ঢাকায় আসার পর এই শিম প্রতি কেজি ৬০ টাকা করে কিনতে হয় ক্রেতাদের। নিত্যপণ্যের অযৌক্তিক-অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পেছনে রয়েছে সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি। এ ছাড়া এর জন্য সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যও দায়ী।