কার্বন নিঃসরণ কমাতে বিশ্বজুড়ে চলছে নানা উদ্যোগ। এ জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা বা তেলের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে সরে আসার প্রবণতা বেড়েছে। ঝোঁক বাড়ছে সৌর ও বায়ুবিদ্যুতের দিকে। কিন্তু উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সড়ক পথে বিশাল আকৃতির উইন্ড টারবাইন ব্লেড পরিবহন একটি বড় সমস্যা। এ সমস্যার সমাধানে তৈরি করা হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম উড়োজাহাজ।
উড়োজাহাজটি তৈরি করছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান রাদিয়া। ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করা কোম্পানিটি ‘উইন্ডরানার’ নামের উড়োজাহাজটি তৈরির কাজ এরইমধ্যে অনেক দূর এগিয়েছে। উইন্ডরানার টারবাইন পরিবহনের কাজ শুরু করলে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনে এক ধরনের বিপ্লব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ এতে করে বিশ্বের বড় বড় বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ফার্মগুলোয় অল্প সময়ের মধ্যে বিশাল আকৃতির টারবাইন ও প্রয়োজনীয় অন্য উপকরণগুলো পাঠানো যাবে।
উইন্ডরানার তৈরিতে জ্বালানি শিল্পের অন্য কোম্পানিগুলো এগিয়ে এসেছে। এটি তৈরি করার জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে এরই মধ্যে ১০০ কোটি ডলার সংগ্রহ করা হয়েছে। উড়োজাহাজটির নকশা ও তৈরির অন্য প্রক্রিয়া অর্ধেকের বেশি শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দৈর্ঘ্য ও ব্যসে উইন্ডরানার বিশ্বের বৃহত্তম উড়োজাহাজ বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটির দৈর্ঘ্য ৩৫৬ ফুট। এতদিন পর্যন্ত ৩০২ ফুট দৈর্ঘ্য নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম উড়োজাহাজ ছিল রাশিয়ার এক্রানোপ্লান। কিন্তু এটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে ইউক্রেনের মালিকানাধীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম উড়োজাহাজ আন্তোনোভ আন-২২৫ মরিয়া রুশ হামলায় ধ্বংস হয়েছে। এটির দৈর্ঘ্য ছিল ২৭৬ ফুট।
উইন্ডরানারের কার্গো অংশের (কার্গো স্পেস) ব্যস ২ লাখ ৭২ হাজার কিউবিক ফুট, যা এয়ারবাস বেলুগাএক্সএলের কার্গো স্পেসের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। এয়ারবাস বেলুগাএক্সএলের কার্গো স্পেস মাত্র ৭৮ হাজার কিউবিক ফুট। উইন্ডরানার ৩৪৪ ফুট দৈর্ঘ্যের একসঙ্গে একাধিক টারবাইন ব্লেড বহন করতে পারবে। ৪১ ফুট উচ্চতায় এক যাত্রায় ১ হাজার ২৪০ মিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম হবে উইন্ডরানার। মাত্র ৬ হাজার ফুট দৈর্ঘ্যের রানওয়েতে এটি ওঠানামা করতে পারবে। উইন্ডরানার হবে পরিবেশবান্ধব। তবে বিশ্বের বৃহত্তম এ উড়োজাহাজটির তৈরির কাজ কবে শেষ হবে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।